মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
দশ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় এক রোহিঙ্গাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে প্রত্যককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক নিশাত সুলতানা বুধবার (৫ নভেম্বর) এ রায় ঘোষণা করেন। কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভা:) বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
দন্ডিত আসামী হলো : কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের মৃত লালু মিয়া ও জহুরা খাতুনের পুত্র রোহিঙ্গা মোঃ সামছুল আলম। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম চৌধুরী এবং আসামী পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইব্রাহিম মামলাটি পরিচালনা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
২০২৩ সালের ২ জুন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে র্যাব-১৫ এর একটি টিম এক অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার- চট্টগ্রাম সড়কের কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের গেইট থেকে মোঃ সামছুল আলমকে আটক করে। পরে আটককৃত ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় র্যাব-১৫ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ আবদুর রহমান বাদী হয়ে মোঃ সামছুল আলমকে একমাত্র আসামী করে কক্সবাজার সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার কক্সবাজার সদর থানা মামলা নম্বর : ০২, তারিখ : ০১/০৬/২০২৩ ইংরেজি, যার জিআর মামলা নম্বর : ২৯৬/২০২৩ ইংরেজি (কক্সবাজার সদর) এবং এসটি মামলা নম্বর : ২৬৬৭/২০২৩ ইংরেজি।
বিচার ও রায় :
মামলাটি বিচারের জন্য ২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারী আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে তাদের জেরা, আসামী পক্ষে সাফাই সাক্ষী প্রদান, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা, আসামীর আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য্য করা হয়।
রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক নিশাত সুলতানা ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ১০(গ) ধারায় মামলার আসামী মোঃ সামছুল আলমকে দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, একইসাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। দন্ডিত আসামীকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানিয়েছেন।
